প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি (Private Limited Company)
১৯৯৪ সালের কোম্পানী আইন অনুযায়ী প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে সর্বনিন্ম ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন অংশীদার বা পার্টনার প্রয়োজন হয় অপরদিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে সর্বনিন্ম ৭ জন এবং সর্বোচ্চ যেকোন সংখ্যার পার্টনার হতে পারে।
একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি নির্ভর হবে কোম্পানি অথরাইজড ক্যাপিটাল কত হবে তার উপর। অথরাইজড ক্যাপিটালের উপর ভিত্তি করে সরকারী তথা RJSC ফি নির্ধারণ হয়। একটা বিষয় মনে রাখা দরকার, অথরাইজড ক্যাপিটাল আর পেইড-আপ ক্যাপিটাল দুটো ভিন্ন বিষয়। অথোরাইজ ক্যাপিটাল হচ্ছে কোম্পানির (অনুমোদিত মূলধন-বর্তমান ইনভেস্ট + ফিউচার ইনভেস্ট) আর পেইড-আপ ক্যাপিটাল হচ্ছে (পরিশোধিত মূলধন – যা কোম্পানির বর্তমান ইনভেস্ট )
অথরাইজড ক্যাপিটাল ।Authorized Capital।
অথরাইজড ক্যাপিটাল হচ্ছে আপনি এই কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা শেয়ার ইস্যু করত পারবেন। আর পেইড-আপ ক্যাপিটাল হচ্ছে শেয়ার হোন্ডারগণ এই মুহূর্তে কত টাকা শেয়ার গ্রহণ করেছেন। যেমন আমি কোম্পানির এমডি, আমি ২ লাখ টাকার শেয়ার গ্রহণ করলাম, আপনি কোম্পানির চেয়ারম্যান, আপনি দুই বা তিন লাখ টাকার শেয়ার গ্রহণ করেছেন। এভাবে সর্ব মোট ১ কোটি টাকা পর্যন্ত শেয়ার গ্রহণ করা যাবে। আমি বা আপনি তথা শেয়ার হোল্ডারগণ যে পেইড-আপের শেয়ার গ্রহণ সেই টাকাপ্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি কি?
কিছু ব্যক্তি যখন ব্যক্তিগত ভাবে বা প্রাইভেটলি কোন কোম্পানি গঠন করেন তখন তাকে বলা হয় প্রাইভেট কোম্পানি। উল্লেখ্য যে চাইলেই যে কেই নিজের ইচ্ছামত এই কোম্পানির অংশীদার হতে পারে না যদি না মূল অংশীদাররা নতুনদের যুক্ত করতে অনুমোদন দেয়।
একটি প্রাইভেট বা লিমিটেড কোম্পানিতে ২-৫০ জন পর্যন্ত শেয়ার হোল্ডার বা অংশীদার রাখা যায় যেটাও লিমিটেড।ই কোম্পানির ব্যাংক একাউন্টে পরবর্তীতে ট্রান্সফার দিতে হবে। সুতরাং পেইড-আপ ক্যাপিটাল যা হোক না কেন অথরাইজড ক্যাপিটাল বেশী হলে ভালো। তাহলে পরবর্তীতে নতুন নতুন শেয়ার হোল্ডারের নিকট শেয়ার বিক্রি করা যায়।
শেয়ার হোল্ডার ও ডাইরেক্টরঃ
সাধারণত অংশীদারদের একটা ক্ষুদ্র অংশ, ২-৫০ জন ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেন। এরা বার্ষিক সাধারণ সভাতে উপস্থিত থাকেন, কোম্পানির হয়ে কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন
বোর্ড অব ডিরেক্টরস: কয়েকজন ডিরেক্টর মিলে, সাধারণত ২-১০ জন একটি বোর্ড অব ডিরেক্টরস তৈরি করে যারা কোম্পানি পরিচালনা করেন।
ম্যানেজিং ডিরেক্টর: সাধারণ অংশীদার বা মালিকদের মধ্য থেকে একজন [সাধারণত যার শেয়ার বেশি থাকে তিনি] ম্যানেজিং ডিরেক্টর হয়ে থাকেন। সাধারণত ম্যানেজিং ডিরেক্টর একটা কোম্পানির সকল সিদ্ধান্ত নেন। একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কোম্পানি যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সকল ক্ষমতা থাকে এইটা আসলে নির্ভর করবে কোম্পানির আর্টিকেলে ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে কোম্পানির পাওয়ার দেওয়া আছে কিনা তার উপরে।
পেইড আপ ক্যাপিটাল Paid-up capital
কোন কোম্পানি যত টাকা দিয়ে শুরু হবে ( কোম্পানির বর্তমান ইনভেস্ট বা বর্তমান ভ্যালু) সেটা হচ্ছে সেই কোম্পানির পেইড আপ ক্যাপিটাল।
অথরাইর্জড ক্যাপিটাল: কোন কোম্পানি কত টাকা বর্তমান এবং ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করতে চায় বা নিতে চায় সেটা হচ্ছে অথরাইজড ক্যাপিটাল।
মেমরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন: এটি একটি দলিল, এই দলিলে একটি কোম্পানি কি কাজ করবে তা উল্লেখ থাকে।
আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন : এটি একটি দলিল, এই দলিলে একটি কোম্পানি কিভাবে কাজ করবে তা উল্লেখ থাকে।
অথরাইজড ক্যাপিটাল Authorized Capital কি?
একটি কোম্পানী শুরুর সময় ঐ কোম্পানীর সর্বোচ্চ মূলধনের যে সীমা নির্ধারন করা হয় বা অনুমোদন করা হয় সেটাই হল ঐ কোম্পানির অথরাইজড ক্যাপিটাল:
মনে করুন, আপনার কোম্পানীর অথরাইজড ক্যাপিটাল ১০০ টাকা, এবং পার্টনার ১০ জন, তাহলে ১০ টাকা করে দশ জনের ভেতর সর্বোচ্চ ১০ টি শেয়ার বন্টন করা যাবে। এর বেশী শেয়ার বন্টন করা যাবে না। বেশী করতে চাইলে অথরাইজড ক্যাপিটাল আবার সংশোধন করে বাড়িয়ে নিতে হবে।
পরিশোধিত মূলধন বা পেইড-আপ ক্যাপিটাল হল অনুমোদিত ( পরিশোধিত মূলধন – বর্তমান ইনভেস্ট ) বা অথরাইজড ক্যাপিটাল সীমার মধ্যে একটা এমাউন্ট যা কোম্পানীর ব্যাংক একাউন্টে জমা শুরতে জমা দিতে হবে।
Memorandum of Article (MOA) বা সংঘ স্মারক কি?
লিমিটেড কোম্পানির মেমোরেন্ডাম হল কোম্পানির নিবন্ধনী নাম, লক্ষ্য এবং ব্যবসা পরিচালনার প্রকার সম্পর্কে সংক্ষেপে তথ্য সারমর্ম করা হয়ে থাকে। মেমোরেন্ডাম একটি বৈধকর দলিল হিসেবে কাজ করে, যা কোম্পানির ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা, শেয়ার ডিলিংস, ওয়ান্টেড লিমিটেশন এবং অন্যান্য বিশেষ শর্তাবলীগুলি সংজ্ঞায়িত করে।
লিমিটেড কোম্পানির মেমোরেন্ডামে সাধারণত নিম্নলিখিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে:
কোম্পানির নাম: মেমোরেন্ডামে কোম্পানির সঠিক নাম এবং সংক্ষেপে বর্ণিত হয়।
লক্ষ্য: কোম্পানির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বিবরণ। এটি কোম্পানির ব্যবসায়িক প্রকার এবং ধারাবাহিকতার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
কোম্পানির শেয়ার ডিলিংস: কোম্পানির নির্দিষ্ট প্রকারের শেয়ার কতগুলি হিসেবে উপলব্ধ থাকবে এবং কীভাবে এগুলি বিতরণ করা হবে তা নির্ধারণ করা হয়।
ওয়ান্টেড লিমিটেশন: কোম্পানির কর্তৃক নিষ্কৃতি প্রদানের শর্ত সম্পর্কে মেমোরেন্ডামে বর্ণিত হয়।
অন্যান্য শর্তাবলী: আরও যে কোনও বিশেষ শর্তাবলী বা নির্দিষ্টকরণ যদি থাকে তা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
এই মেমোরেন্ডাম অক্সীজেনের মতো কোম্পানির বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক অংশ হিসাবে কাজ করে, কোম্পানির ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা এবং আইনি মামলার সুরক্ষা সংজ্ঞায়িত করে।
কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন এর জন্য খরচ কত পড়বে?
RJSC থেকে লিমিটেড কোম্পানি (LTD) গঠন করতে আপনার অথোরাইজড কেপিটালের উপর কোম্পানী নিবন্ধন ফি নির্ভর করে।
সরকারি ফি + আমাদের সার্ভিস চার্জ + ১৫% ভ্যাট, সব মিলিয়ে অথোরাইজ ক্যাপিটালের উপরে নির্ভর করে বিভিন্ন প্যাকেজ আকারে সেট করা আছে ।
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ১০ লক্ষ হলে : সব খরচ সহ ২৬০০০/-
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ২০ লক্ষ হলে : সব খরচ সহ ২৮০০০/-
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ৩০ লক্ষ হলে : সব খরচ সহ ৩০০০০/-
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ৪০ লক্ষ হলে : সব খরচ সহ ৩২০০০/-
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ৫০ লক্ষ হলে : সব খরচ সহ ৫৫০০০/-
উথোরাইজ ক্যাপিটাল ১ কোটি হলে : সব খরচ সহ ৬৫০০০ টাকা,
বি:দ্র: ১ কোটির পরে প্রতি এক কোটির জন্য ১৭৫০০ টাকা করে যুক্ত হবে যেমন- ২ কোটির জন্য ৮২৫০০ হাজার

সেবা নিতে যোগাযোগ করুন
আপনার প্রয়োজনীয় সেবাটি নিতে এক্ষুণি "সেবা নিন" বাটনে ক্লিক করুন।